শেরপুরে স্কুলের শৌচাগার থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রের লাশ উদ্ধার



 শেরপুরে একটি বিদ্যালয়ের শৌচাগার থেকে অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর লাশ পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার দুপুরে সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের ভীমগঞ্জ বাজারে অবস্থিত ড্যাফোডিল প্রিপারেটরি অ্যান্ড হাইস্কুলের শৌচাগার থেকে লাশটি উদ্ধার করে সদর থানা–পুলিশ।

ওই শিক্ষার্থীর নাম মো. রিমন হাসান (১৪)। সে সদর উপজেলার একই ইউনিয়নের খুনুয়া মধ্যপাড়া গ্রামের সাগর আলীর ছেলে। রিমন ওই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, স্কুলের পরীক্ষা শেষ করে বৃহস্পতিবার বিকেলে রিমন বাড়িতে যায়। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সে বাড়ি থেকে ভীমগঞ্জ বাজারের উদ্দেশে বের হয়। এর পর থেকে তাঁর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবারের লোকজন বৃহস্পতিবার রাতে একাধিক স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো খোঁজ পাননি।

এদিকে আজ সকালে ড্যাফোডিল প্রিপারেটরি অ্যান্ড হাইস্কুলের নৈশপ্রহরী শেখ ফরিদ বিদ্যালয়ের একটি শৌচাগারে এক কিশোরের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। তাৎক্ষণিক তিনি বিষয়টি বিদ্যালয়ের পরিচালক মো. চাঁন মিয়াকে জানান। সংবাদ পেয়ে সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশটি উদ্ধার করেন। পরে নিহত ছাত্রের মামা লাশটি তাঁর ভাগনে রিমনের বলে শনাক্ত করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের মানুষ সেখানে ভিড় জমান। স্বজনদের কান্নাকাটি ও আহাজারিতে বিদ্যালয়ে শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

রিমনের মা রশিদা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বিদ্যালয়ের কোনো এক ছাত্রীর সঙ্গে রিমনের প্রেম ছিল বলে তিনি শুনেছেন। এর জেরে তাঁর ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের তিনি বিচার ও শাস্তির দাবি করেন।

এদিকে লাশ উদ্ধারের সংবাদ পেয়ে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. হান্নান মিয়াসহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), জামালপুর ও অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), ময়নসিংহের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

পিবিআই জামালপুরের পুলিশ সুপার এম এম সালাহউদ্দীন আজ বিকেলে বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্বশত্রুতার জেরে অথবা প্রেমঘটিত কারণে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করেছে। হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনে পিবিআই চেষ্টা করছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বশির আহমেদ বাদল বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। রিমনের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনে বাঁ চোখের ভ্রুর ওপর আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। পুরো শরীর কাদামাখা ছিল। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয়ে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।




কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.