মেসিকে পেতে বছরে ৩০ কোটি ডলারের প্রস্তাব দিচ্ছে আল হিলাল?

 

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সৌদি আরবে যাওয়ার পর থেকে গুঞ্জনটা উঠেছে। লিওনেল মেসিকেও কি দেখা যাবে সৌদি আরবের ফুটবলে?

গত ৪ জানুয়ারি ইতালির সংবাদমাধ্যম ‘ক্যালসিওমের্কাতো’ এমন একটা সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিল। সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালের সঙ্গে মেসির চূড়ান্ত আলাপ নাকি হয়ে গেছে। অদূর ভবিষ্যতে সৌদি আরবের ক্লাবটিতেই খেলবেন মেসি। আর সেটি হবে ইতিহাসে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকের বিনিময়ে।

স্পেনের সংবাদমাধ্যম ‘মুন্দো দেপোর্তিভো’ আজ মেসির সৌদি আরবের ক্লাবে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, মেসিকে বছরে ৩০ কোটি ডলার পারিশ্রমিক দেওয়ার প্রস্তাব দিতে পারে আল হিলাল।
আপাতত সবই গুঞ্জন। কারণ, ঠিক এর বিপরীতমুখী খবরও আছে।

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের পরই ফরাসি সংবাদমাধ্যম ‘লা পারিসিয়ান’ জানিয়েছিল, পিএসজিতে চুক্তির মেয়াদ বাড়াবেন লিওনেল মেসি। তিন মাস ধরে এ নিয়ে মেসির বাবা ও এজেন্ট হোর্হে মেসির সঙ্গে কথা বলেছে পিএসজি। কাতার বিশ্বকাপের সময় দুই পক্ষ চুক্তি নবায়ন করার ব্যাপারে নাকি একমতও হয়েছিল।

লা পারিসিয়ান’ তখন জানিয়েছিল, মেসি ছুটি কাটিয়ে পিএসজিতে ফেরার পর সবকিছু চূড়ান্ত হবে। বিশ্বকাপ জয়ের পর আর্জেন্টিনায় ছুটি কাটিয়ে মেসি এখন প্যারিসে। মাঠে নেমে গোলও করেছেন কাল রাতে। এখন সেই নতুন চুক্তি নিয়ে তোড়জোর চলাই স্বাভাবিক।

পিএসজিতে এক বছর কিংবা দুই বছরের জন্য নতুন চুক্তি করতে পারেন সাতবার ব্যালন ডি’অরজয়ী কিংবদন্তি। পিএসজিতে মেসির সম্ভাব্য এই নতুন চুক্তির মেয়াদ দেখে কেউ কেউ দুইয়ে দুইয়ে চারও মিলিয়ে নিতে পারেন।

ধরা যাক, ৩৫ বছর বয়সী মেসি পিএসজিতে আরও দুই বছর থেকে ক্লাব পাল্টালেন। সেটি তো সৌদি আরবের আল হিলালও হতে পারে! যদিও মুন্দো দেপোর্তিভোর দাবি, মেসি পিএসজি ছাড়ার পর নয়, তাঁকে এখনই পেতে চায় আল হিলাল। সম্ভব হলে এ বছর ফেব্রুয়ারিতে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের আগেই।

১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে ক্লাব বিশ্বকাপ। ভেন্যু শহর রাবাত ও তানজিয়ার। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, মেসি যদি এখনই পিএসজি ছাড়তে চান, তাহলে প্যারিসের ক্লাবটির সঙ্গেও কথা বলতে হবে আল হিলালকে। কারণ, পিএসজির সঙ্গে মেসির বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে এ বছরের ৩০ জুন।

আল নাসর ও আল হিলালের খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া সম্মিলিত দলের সঙ্গে ১৯ জানুয়ারি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলবে পিএসজি। এ জন্য আগামী সপ্তাহে সৌদি আরবে যাবে পিএসজি। মুন্দো দেপোর্তিভো জানিয়েছে, তখন সৌদির শীর্ষ নেতারা মেসিকে নিয়ে দর–কষাকষি করতে পারেন পিএসজির সঙ্গে


মুন্দো দেপোর্তিভো জানিয়েছে, মিসর ও গ্রিসের সঙ্গে যৌথভাবে ২০৩০ বিশ্বকাপের আয়োজক হতে বিশ্বের সামনে নিজেদের ইমেজ বাড়ানোর চেষ্টা করছে সৌদি আরব। ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পেতে ফুটবলই হতে পারে সবচেয়ে বড় বাহন। নিজেদের ঘরোয়া লিগ দিয়ে বিশ্বের নজর কাড়তে বড় তারকা লাগবে। রোনালদোকে পাওয়ার পর মেসিকেও পেলে এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে! এ জন্য যত টাকা লাগে লাগুক—এমন একটা চিন্তাই কাজ করছে। সৌদি আরবের ঘরোয়া লিগের ক্লাব আল নাসরে পারিশ্রমিক ও অন্য সবকিছু মিলিয়ে রোনালদো বছরে প্রায় ২১ কোটি ডলার আয় করবেন। ফুটবলের ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক।

আল হিলাল মেসিকে যে পারিশ্রমিক দিয়ে উড়িয়ে আনতে চায় বলে খবর, ৩০ কোটি ডলারের সেই অঙ্কটা তাই অস্বাভাবিক বলে না–ও মনে হতে পারে। কারণ, আল হিলাল হলো আল নাসরের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী, এদিকে রোনালদোও মেসির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী—রোনালদো যে লিগে খেলবেন, সেখানে মেসিকে উড়িয়ে আনতে পর্তুগিজ তারকার চেয়েও বেশি বেতন ও ভাতা দেওয়ার প্রস্তাবটা তাই অবাস্তব বলে মনে হয় না। বিশেষ করে মুন্দো দেপোর্তিভোর খবর অনুযায়ী, মেসিকে আনতে যেখানে সৌদি সরকারও বিনিয়োগ করবে।

আরব দেশগুলোর মধ্যে সৌদির ঘরোয়া লিগ সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও বেশ ভালো। আল হিলাল ও আল নাসরের মধ্যকার ম্যাচ হলো সৌদি আরবের ‘এল ক্লাসিকো’, যেটিকে সৌদি আরবে ‘রিয়াদ ডার্বি’ বলা হয়। বিশ্বের নজর কাড়তে ‘রিয়াদ ডার্বি’ রোনালদো বনাম মেসি হয়ে গেলে আর কী লাগে!

মেসির সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কও বেশ ভালো। আর্জেন্টাইন তারকা এখন সৌদির পর্যটন দূত। সৌদি আরবের বিশ্বকাপ আয়োজক হওয়ার স্বপ্ন সফল করতে মেসিকে কাজে লাগানোর কথা তো শোনা যাচ্ছে অনেক দিন ধরেই। সেটি মেসি সৌদি আরবে খেলতে খেলতেই করেন কি না, এটাই এখন কৌতূহলের বিষয়।




কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.